বাংলাদেশে চেক ডিজঅনার মামলা

বাংলাদেশে চেক ডিজঅনার মামলা আজকাল অনেক আলোচিত ও জরুরি একটি বিষয় হিসেবে গণ্য হচ্ছে। চেক হল অর্থ প্রদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় কিন্তু অনেক সময় চেক পেমেন্ট ব্যর্থ হওয়ায় অর্থপ্রাপ্তি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশে-চেক-ডিজঅনার-মামলা
যখন কেউ ব্যাংকের চেক জমা দেয় কিন্তু তা ক্লিয়ার হয় না, তখন সেই চেক ডিজঅনার বিবেচিত করা হয় এবং এর বিরুদ্ধে মামলা করার আইনি সুযোগও থাকে। আইনগত প্রক্রিয়া ও মামলা দায়েরের ধাপ ও সহজ সমাধানের উপায় সম্পর্কে জেনে নেই।

পেজ সূচিপত্রঃ বাংলাদেশে চেক ডিজঅনার মামলা

বাংলাদেশে চেক ডিজঅনার মামলা

বাংলাদেশে চেক ডিজঅনার মামলা একটি জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ আইনি বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আমাদের দেশের অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা চেক ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে থাকে। প্রথমেই জেনে নেওয়া প্রয়োজন চেক ডিজঅনার বলতে কী বোঝানো হচ্ছে। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যাদের নামে চেক লেখা হয় এবং যাদের ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের অধিকার থাকে তাকে চেক ডিজঅনার বলা হয়। চেক ডিজঅনার মামলা বলতে এমন একটি মামলা বোঝায় যা চেক নিয়ে বিরোধ বা সমস্যা সৃষ্টি হলে করা হয়।

আজকের আর্টিকেলে আপনাদের জানিয়ে দেবো চেক ডিজঅনার মামলার ধাপসমূহ সম্পর্কে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত নথি ও সময়সীমা সম্পর্কে। এবং আমরা আলোচনা করব নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস এক ১৮৮১ এর ধারা ১৩৮ অনুযায়ী আপনার আইনি অধিকার সম্পর্কে। চেক ডিজঅনার হয়ে গেলে শুধু আর্থিক ক্ষতি হয় না বরং আইনি জটিলতারও সৃষ্টি করে। তাই এই সম্পর্কে সাধারণত ব্যবসায়ীদের জানা খুবই জরুরী। পরবর্তী ধাপ গুলোতে আইনি বিশ্লেষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

চেক ডিজঅনার মামলার প্রেক্ষাপট

যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করে এবং ঋণ লেনদেন করে অথবা ব্যক্তিগত ভাবে আর্থিক লেনদেন করে তাদের জন্য চেক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এটি সহজে বহন করা যায় এবং লিখিত প্রমাণ হিসেবে এটি কার্যকর এছাড়াও ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে নিরাপদে অর্থ আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে চেক দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাসযোগ্য একটি উপায় হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু যখন কোন কারনে ব্যাংক চেক পরিশোধ করতে অস্বীকৃতি জানায় তখন তাকে চেক ডিজঅনার বলে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে এই মামলা ব্যাপকভাবে আলোচিত একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চেক ডিজঅনার হওয়ার কারণ হলো ইচ্ছাকৃতভাবে চেক প্রদান করেও একাউন্টে পর্যাপ্ত অর্থ না রাখা একটি কারণ। আবার আইনি দায় এড়ানোর কৌশল হিসেবে চেক প্রদান করাটা এর কারণ হচ্ছে। যার কারণে ভুক্তভোগীগণ নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস অ্যাক্ট ১৮৮১ এর ধারা ১৩৮ থেকে ১৪৪ এর অধীনে মামলা করে ন্যায় বিচার চাইছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ব্যক্তিগত শুধুমাত্র নয়, জমি বাড়ি কেনাবেচা সহ সাপ্লাই কন্টাক্ট, এমনকি পারিবারিক আর্থিক সহায়তার ক্ষেত্রেও এই মামলা দেখা যাচ্ছে। চেক ডিজঅনার মামলার প্রেক্ষাপট হলো আর্থিক লেনদেনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশে চেক আইন ভিত্তি

চেক ডিজঅনার মামলা পরিচালনার আইনি ভিত্তি প্রধানত নেগোশিয়েয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট, ১৮৮১। এই আইন থেকে চেক প্রমিসারি নোট এবং অন্যান্য নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট এর বিষয়গুলো পাওয়া যায়। আইনটির ১৩৮ ধারা এবং এর পরবর্তী ধারা গুলোতে চেক ডিজঅনার সংক্রান্ত অপরাধ ও তার শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে। আইনটির ধারা ১৩৮ অনুযায়ী যখন কোন ব্যক্তি তার একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকা সত্ত্বেও চেক ইস্যু করে এবং সেই চেক ব্যাংক থেকে প্রত্যাখ্যাত হয় তখন তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
বাংলাদেশে-চেক-ডিজঅনার-মামলা
ব্যাংকিং লেনদেনের স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য এই আইনটি প্রণীত করা হয়। এর পাশাপাশি এর আরেকটি উদ্দেশ্য হলো অর্থ প্রদান নিশ্চিত করা। যার ফলে ব্যবসায়িক ক্রেতা ও অন্যান্য পক্ষের অর্থনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষিত হয়। এই আইনের ধারা ১৩৮ এর সাথে ধারা ১৩৯, ১৪০ এবং ১৪১ এ চেক সংক্রান্ত অন্যান্য অপরাধ বর্ণনা করা হয়েছে। জালিয়াতি, ভুয়া স্বাক্ষর এবং অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে চেক ব্যবহার সম্পর্কিত বিধানগুলো এই ধারাগুলোতে আছে। এর পাশাপাশি চেক ডিস্কনার মামলার প্রক্রিয়া ও শাস্তি নির্ধারণে এই ধারাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

চেক ডিজনার মামলা প্রক্রিয়া

চেক ডিসঅনার মামলা প্রক্রিয়া নাগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট, ১৮৮১ এবং ফৌজদারী কার্যবিধি অনুসারে সম্পন্ন হয়। ব্যাংকে চেক জমা দেওয়ার পর যদি চেক অনাদায় হয় তাহলে যে চেক প্রদান করেছে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। নিচে ধাপ গুলো উল্লেখ করা হলোঃ

  • চেক ফেরত আসা।
  • ব্যাংক থেকে ফেরত মেমো পাওয়া।
  • আইনি নোটিশ পাঠানো।
  • নোটিশের সময়সীমা শেষ হওয়া।
  • মামলা দায়ের।
  • আদালতের প্রাথমিক যাচাই।
  • আসামের হাজিরা ও সাক্ষ্য গ্রহণ।
  • মামলার রায় প্রদান।
চেক ডিজঅনার মামলা প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার ভিত্তি তখন থেকেই শুরু হয় যখন প্রাপক যে চেকটি ব্যাংকে জমা দেয় এবং ব্যাংক যদি অপর্যাপ্ত অর্থ, অ্যাকাউন্ট বন্ধ বা স্বাক্ষরের অসঙ্গতি অথবা অন্যান্য কোনো কারণে চেক ফেরত দেয়। ব্যাংক চেক ফেরতের কারণ উল্লেখ করে একটি রিটার্ন মেমো দেয় এবং চেক ফেরত আসার পর ৩০ দিনের মধ্যে প্রাপককে অবশ্যই আইনি নোটিশ পাঠাতে হয়। নোটিসের চেক এর মূল্য পরিশোধের জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়। যদি প্রাপক কোনোটিশ পাওয়ার পর ১৫ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করে তাহলে মামলা করার সুযোগ তৈরি হবে।
নোটিশের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর এক মাসের মধ্যে স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করতে হয় এবং তার সাথে চেক এর মূল কপি, ব্যাংকের রিটার্ন মেমো, নোটিশের কপি এবং প্রেরণের প্রমাণ আর প্রয়োজনীয় আদালত ফি জমা দিতে হয়। অভিযোগ পত্র গ্রহণের পর আদালত প্রাথমিক শুনানি করে দেখেন যে অভিযোগ গ্রহণযোগ্য কিনা এবং আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। আসামের হাজিরা ও সাক্ষ্য গ্রহণের পর সেটির উপর ভিত্তি করে আদালত রায় প্রদান করে থাকেন এবং এই আইনের ধারা ১৩৮ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড, জরিমানা অথবা উভয়দণ্ড দেওয়া যেতে পারে।

চেক ডিজঅনার শাস্তি জরিমানা

চেক ফেরত হওয়া বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একটি গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস অ্যাক্ট, ১৮৮১ এর ধারা ১৩৮ থেকে ১৪১ পর্যন্ত এটির শাস্তি বর্ণনা করা হয়েছে। যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে দেনা পরিশোধের জন্য ইস্যুকৃত চেক ফেরত করিয়েছেন এমন যদি প্রমাণ হয় তাহলে আদালত সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দিতে পারেন এবং অনেক সময় এই সাজা ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই আইন অনুযায়ী অভিযুক্তকে চেকের সমপরিমাণ অর্থের দ্বিগুণ পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে। 

আদালত চাইলে একসাথে কারাদণ্ড ও জরিমানা উভয় দিতে পারে এবং এতে ভুক্তভোগী তার পাওনা অর্থ জরিমানা টাকা থেকে ফেরত পেতে পারেন। যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি এই জরিমানা পরিশোধ না করে তাহলে অতিরিক্ত কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হবে তাকে। এই অপরাধের কারণে অভিযুক্ত ব্যক্তি ব্যাংকিং সিস্টেম অবিশ্বাসযোগ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারেন। আর যদি এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত হন তাহলে ভবিষ্যতের লোন, ক্রেডিট কার্ড, ব্যবসায়িক চুক্তি এবং আর্থিক লেনদেনের সুযোগ হারিয়ে ফেলবেন। আর্থিক প্রতারণা প্রতিরোধ করা এই আইনের মূল উদ্দেশ্য।

চেক ডিজঅনার প্রতিরক্ষা প্রতিকার

বাংলাদেশে চেক ডিজঅনার মামলা-তে প্রতিরক্ষা ও প্রতিকার কি সেটি জেনে রাখা খুব জরুরী বিষয়। যদি চেক ডিজঅনার হওয়ার পরে আইনি নোটিশ পাওয়ার আগে আপনি সব টাকা বা অর্থ পরিশোধ করে দেন তাহলে মামলার সম্ভাবনা কমে যায়। প্রয়োজনে আপনি আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেন। কারণ আইনজীবী আপনার মামলার কাগজপত্র প্রস্তুতি থেকে প্রমাণাদি সংগ্রহ করা এবং আইনি নোটিশ এর উত্তর দেওয়া সহ সব আইনি কাজ করে দিবেন। আপনি চাইলে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে আদালতের বাইরে এটি মিটিয়ে নিতে পারেন।

যদি মধ্যস্থতার জন্য অপর পক্ষ রাজি না হয় তাহলে আদালতে যুক্তি ও প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে। সেখানে আপনাকে নিজের সততা ও দায়বদ্ধতা প্রমাণ করার মাধ্যমে নিজেকে দোষমুক্ত করতে হবে। এছাড়াও আপনি যদি ডিজঅনার মামলায় অভিযুক্ত হন তাহলে আদালতে জামিন আবেদন করতে পারবেন। জামিন আবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে চাপুন। এছাড়া যদি আপনি ডিজঅনার মামলার ঝুঁকি কমাতে চান তাহলে আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করে চেক ইস্যু করুন এবং প্রয়োজনীয় ব্যাংক ব্যালেন্স রাখুন।

চেক ডিজঅনার মামলায় আইনজীবীর ভূমিকা

চেক ডিজঅনার মামলা একটি সংবেদনশীল ও জটিল আইনি প্রক্রিয়া। এখানে আইনজীবীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মামলার প্রতিটি ধাপে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবী সঠিকভাবে পরিচালনা করলে আপনি মামলার ফলাফল আপনার দিকে পাবেন। আপনি আইনজীবীর কাছ থেকে মামলার আইনি পরামর্শ পাবেন। তারপর আইনজীবী আপনার কাছ থেকে চেক বাউন্স সংক্রান্ত সব প্রমাণ সংগ্রহ করে আইনি পদক্ষেপ নিবেন। এবং লিগাল নোটিশ প্রস্তুত করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রাপককে প্রেরণ করবেন।
লিগার নোটিশ যদি না পাঠানো হয় তাহলে আদালতে সেই মামলাটি গ্রহণযোগ্য হয় না। মামলা আদালতে দায়ের করার সময় আপনার আইনজীবী প্রয়োজনীয় পিটিশন তৈরি করবেন এবং চেক বাউন্স, এর সমস্ত তথ্য, তারিখ, ব্যাংকের প্রত্যাশিত নোটিশ ইত্যাদি সকল কিছু যুক্ত করবেন। আইনজীবী আপনার মামলায় আপনার পক্ষে প্রমাণ ভিত্তিক প্রতিরক্ষা কৌশল তৈরি করবেন। এমন আইনি পদক্ষেপের সকল বিষয়ে আইনজীবী আপনাকে সাহায্য করে থাকেন। কাজেই বোঝাই যাচ্ছে চেক ডিজঅনার মামলায় আইনজীবীর ভূমিকা অনেক।

চেক ডিজঅনার মামলায় খরচ কত

চেক ডিজঅনার মামলার খরচ একেক ক্ষেত্রে একেক রকম হয়ে থাকে। খরচের হিসাবটি নির্ভর করে মামলার জটিলতা, দাবীকৃত অর্থের পরিমাণ এবং আদালতের অবস্থান ও আইনজীবীর ফি এর উপর। মামার খরচ কে তিনটি প্রধান অংশে ভাগ করা যায়। নিচে তা দেওয়া হলঃ

  • রিয়েল নোটিশ খরচ।
  • মামলা দায়ের খরচ।
  • আইনজীবীর ফি।
লিগ্যাল নোটিশ এর খরচ সাধারণত ২,০০০ টাকা থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়। মামলা দায়েরের খরচ ১,৫০০ টাকা থেকে ৩,০০০ এর মধ্যে হয়। আর আইনজীবীর খরচ বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। ১৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০,০০০ টাকা বা তার বেশিও টাকা গুনতে হতে পারে আইনজীবীর জন্য। তবে জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে এই ফি টা কমিয়ে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়াও কিছু অতিরিক্ত খরচ আছে।

যেমন আপনি যদি আপীল করেন তাহলে রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করতে হলে কোর্ট ফ্রি এবং আইনজীবীর ফি আলাদাভাবে দিতে হয়। আবার আপনার যাতায়াত অন্যান্য খরচ আছে। যেমন ডকুমেন্ট বা প্রমাণপত্র ফটোকপি ইত্যাদির খরচ। চেক ডিজাঅনর মামলা পরিচালনার জন্য আপনাকে ২০,০০০ থেকে ৬০,০০০ এর মধ্যে টাকা গুনতে হতে পারে।

চেক ডিজঅনার মামলার সময়সীমা

চেক ডিজঅনার মামলার সময়সীমা কে আমরা চারটি ভাগে ভাগ করে নিতে পারি। চেক জমা দেওয়ার সময় সীমা, লিগাল নোটিশ পাঠানোর সময়সীমা, মামলা দায়ের এর সময়সীমা এবং মামলার নিষ্পত্তির সময়সীমা এই চার ভাগে। নেগেশিবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট, ১৮৮১ এর ১৩৮ নাম্বার ধারায় এই সময়সীমার কথা পাওয়া যায়। চেক ইস্যুর তারিখ থেকে ৬ মাস বা চেক ভ্যালিডিটি পিরিয়ড এর মধ্যে যে ব্যাংকে জমা দিতে হবে। যখন চেক ডিজঅনার হয়ে যাবে তারপর ব্যাংকের মেমো পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাতে হবে।
বাংলাদেশে-চেক-ডিজঅনার-মামলা
লিগ্যাল নোটিশ পাঠালে ১৫ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধের সময় দেওয়া হয়। যদি ১৫ দিনের মধ্যে টাকা না দেয় তাহলে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে। মামলা নিষ্পত্তির সময়সীমা নির্ভর করে আদালতের কার্যক্রম, প্রমাণ, উপস্থাপন এবং সাক্ষীর উপস্থিতির উপর। সাধারণত এই মামলা নিষ্পত্তির জন্য ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত সময় লাগে। তবে যদি আপনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চান তাহলে আপনাকে আইনের আশ্রয় নিতেই হবে।

মন্তব্যঃ বাংলাদেশে চেক ডিজঅনার মামলা

বাংলাদেশে চেক ডিজঅনার মামলা সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আজকের আর্টিকেলে গুরুত্বপূর্ণ আটটি পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই পয়েন্টগুলো আপনাকে চেক ডিজঅনার মামলায় সহযোগিতা করবে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আইনজীবীর সহায়তা নেওয়া। কেননা মামলা মানেই সেখানে আইনজীবীর ভূমিকা অবশ্যই থাকবে।

আজকের আর্টিকেলের মূল উদ্দেশ্য হলো যাদের আইন সম্পর্কে একেবারেই ধারণা নেই অথচ তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন তারা যেন পরবর্তীতে প্রতারণার শিকার না হন এবং প্রতারণার শিকার যদিও হয়ে থাকেন তাহলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের পূর্ববর্তী কার্যক্রম কি হতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। বাংলাদেশের চেক ডিজঅনার হওয়ার অনেক নজির দেখা যায়। আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমিন একটিভ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url